Sunday, November 10, 2013

রায়ের অনুলিপি তুলতে খরচ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা!

ঢাকা: পিলখানায় বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকাণ্ড মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের নিজ খরচে রায়ের একটি অনুলিপি তুলতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করে খরচ লাগবে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের এক আইনজীবী।


পিলখানা হত্যাযজ্ঞ মামলায় আসামিপক্ষের নিয়মিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম সরদার বাংলানিউজকে জানান, জজ আদালতের দেওয়া আসামিদের সাজার বিপরীতে হাইকোর্টে আপিল করতে রায়ের সার্টিফায়েড কপির (সত্যায়িত অনুলিপি) প্রয়োজন হয়। পিলখানা হত্যাযজ্ঞ মামলাটির রায় প্রায় ৪ হাজার পৃষ্ঠার। আদালতে মামলার সার্টিফায়েড কপি (সত্যায়িত অনুলিপি)তুলতে গেলে প্রতি পৃষ্ঠায় আমাদের ৩০ টাকা করে দিতে হয় । সে হিসাবে প্রত্যেক আসামিকে নিজ খরচে একেকটি রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি তুলতে হলে এ বাবদ খরচ পড়বে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।


তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭১ ধারার বিধানমতে বিনামূল্যে রায়ের অনুলিপি চেয়ে আবেদন করেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৩৯ জন আসামি। রায় প্রদানের তারিখ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিলের কথা রায়ে বলা হয়েছে। কিন্তু রায়ের অনুলিপি না পাওয়ায় তারা এখন পর‌্যন্ত আপিল দায়ের করতে পারছেন না।


রোববার আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীম সরদার, ফারুক আহম্মেদ, রমজান আলী, এমদাদুল হক লালসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী আদালতের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। মামলাটির বিচারিক আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান তাদের বলেন যে, রায়ের অনুলিপি পেতে দেরি হলেও আপিল দায়েরে সমস্যা হবে না। কেননা, যেদিন রায়ের অনুলিপি সরবরাহ করা হবে অনুলিপিতে সেদিনের তারিখ থাকবে। ওই তারিখ থেকে সাত দিনের মধ্যে আপিল করা যাবে।


অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক লাল বাংলানিউজকে বলেন, আদালত যথাসম্ভব দ্রুত রায়ের কপি সরবরাহের কথা জানালেও কবে নাগাদ তিনি এ কপি সরবরাহ করতে পারবেন তা বলেননি।


এরপর আইনজীবীরা মহানগর দায়রা জজ মো. জহুরুল হকের কাছে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, মামলাটির রায় বিশাল হওয়ায় সময় লাগবে। কেননা, ৪ হাজার পৃষ্ঠার রায় ৮৫০ আসামিকে দিতে হলে ৩৫ লাখ স্ট্যাম্প কাগজের প্রয়োজন হয়। তাতে কম্পোজ করা লাগে। এছাড়া রায়ের তুলনাকারককে ৩৫ লাখ কাগজের প্রত্যেক পাতায় স্বাক্ষর করতে হবে। এতে অনেক টাকার প্রয়োজন, লোকবল প্রয়োজন। আদালতের সীমিত লোক ও সামর্থ দিয়ে এত দ্রুত সকলকে রায়ের কপি দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে কিভাবে রায়ের কপি দ্রুত সরবরাহ করা যায় তা তিনি দেখবেন।


ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির মধ্যে ১৩ জন পলাতক আছেন।


উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান পিলখানা হত্যাযজ্ঞ মামলায় ১৫২ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের রায় প্রদান করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।


এছাড়াও ৪১৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে করাদণ্ড ও ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।


বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৪১৭ আসামির মধ্যে ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।


বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৩

এমআই/এএসআর/আরআইএস





Next
This is the most recent post.
Older Post
  • Blogger Comment
  • Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment

Copyright © 2012 দ্বিতীয় আলো All Right Reserved
Designed by CBTblogger