Wednesday, November 6, 2013

পুলিশকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছেন ওমর

ঢাকা: বাংলানিউজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট সাখাওয়াত আমিনের ওপর হামলাকারী ওয়াসিম ওমরকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছেন তিনি।


আমিনের ওপর হামলা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, ওমর স্বাভাবিক মানুষের মত আচরণ করছেন না। রমনা থানাধীন সিদ্ধেশ্বরীর বাড়িতে তাকে আটক করতে গেলে তিনি শিশুদের মত কাঁদতে শুরু করেন এবং নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তবে, শাহবাগ থানার হাজতে নিয়ে আসার পর অন্যায় করেছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।


শাহবাগ থানায় গিয়ে ওমরের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি এবং ছবি না তোলার জন্য আকুতি করতে থাকেন।


ওমর বাংলানিউজকে জানান, তিনি তার দুই বন্ধু সোহেল ও নদীর সঙ্গে শামসুন্নাহার হলে চটপটি খেতে যান। তার কোনো দোষ নেই। তিনি আমিনকে চেনেন না। সোহেল আর নদীই আমিনের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি।


এছাড়া, হিযবুত তাহরীর, জামায়াত-শিবির বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও দাবি করেন ওমর।


ওমরের মামা জুবায়ের বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, ওমর দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছেন। রাজনৈতিক কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।


তবে, ওমর যে সোহেলের কথা বলছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। আর নিশিতা আক্তার নদী শামসুন্নাহার হলের ছাত্রলীগ নেত্রী। তারা দু’জনই ওমরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।


বাংলানিউজে আমিনের উপর হামলার ঘটনার খবরে নিজের নাম দেখে হাসপাতালে আমিনকে দেখতে আসেন নদী। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে এবং নিউজটি থেকে নিজের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য আমিনের বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের ফোন করে সাফাই গাইছেন তিনি। তবে, মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন ধূর্ত সোহেল।


এর আগে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শামসুন্নাহার হলের সামনে ওমর ও তার সহযোগীদের হামলার শিকার হন সাখাওয়াত আমিন।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি দোকানে চটপটি খাচ্ছিলেন আমিন। হঠাৎ করে তার পায়ে ওমরের পা লাগে। তিনি ওমরকে কিছু বলে ওঠার আগেই আমিনের কাছে ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে সোহেল। অপরদিকে নিজেকে ছাত্রলীগের নেত্রী পরিচয় দিয়ে আমিনকে গালিগালাজ করতে থাকেন নদী।


দু’জনের সঙ্গে তর্কের একপর্যায়ে পেছন থেকেই আমিনের মাথায় কংক্রিটের টাইলস ও রড দিয়ে আঘাত করেন ওমর ও সোহেল। সজোরে আঘাত পাওয়ায় সেখানেই অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আমিন।


প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে আমিনের মাথার সিটি স্ক্যান করে গুরুতর কিছু না পাওয়ায় হাসপাতাল ছাড়ার অনুমতি দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক পরীক্ষা করাতে গেলে আবারও অসুস্থবোধ করতে থাকেন আমিন এবং কয়েক দফা বমি করেন। তাই আবারও দ্রুত তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।


বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অভজার্ভেশন রুমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আমিন। মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে তার শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা অনুভব করছেন তিনি।


তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ঢামেকের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মাথায় আঘাতের কারণে তার ঘন ঘন বমি হচ্ছে। তার বিশ্রাম প্রয়োজন। সিটি স্ক্যান রিপোর্ট সন্তোষজনক হলেও বৃহস্পতিবার সকালে আবারো তার সিটি স্ক্যান করা হবে।


জানা গেছে, চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে থাকার কারণে আমিন বৃহস্পতিবার তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষা দিতে পারছেন না।


বাংলাদেশ সময়: ০৫৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৩

এডিআর/এইচএ/আরআইএস






from banglanews24.com Bangla http://ifttt.com/images/no_image_card.png http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=e086939a755a2153d8ace7f3f09fc12e
  • Blogger Comment
  • Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment

Copyright © 2012 দ্বিতীয় আলো All Right Reserved
Designed by CBTblogger