জাবি উপাচার্যকে বোমা মারার হুমকি
শিক্ষকদের আন্দোলনে ক্যাম্পাসের বাড়িতে অবরুদ্ধ অধ্যাপক আনোয়ারকে বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে এই হুমকি দেয়া হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জনসংযোগ কার্যালয়ের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উপাচার্য এখনো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে না যাওয়ায় তাকে ও তার স্ত্রীকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।”
এজন্য আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শিক্ষকদের অবস্থানের প্রতিবাদে পাল্টা কর্মসূচিতে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন (ফাইল ছবি)
গত রোববার রাত থেকে ক্যাম্পাসে বাড়িতে সস্ত্রীক অবরুদ্ধ হয়ে আছেন অধ্যাপক আনোয়ার। তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলরত শিক্ষকরা বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান এই সঙ্কট নিরসনে সিনেটের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগে প্যানেল তৈরি এবং শিক্ষকদের নিঃশর্ত আন্দোলন প্রত্যাহারসহ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সঙ্কট নিরসনে তাদের উদ্যোগ, সংসদীয় কমিটির ভূমিকাসহ সব বিষয়গুলো তুলে ধরার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এই নির্দেশনা দেন।
নির্দেশনাগুলো হলো- উপাচার্য অবিলম্বে সিনেট নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং সিনেটের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের প্যানেল তৈরি ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে করা রিট মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেবেন।
এর পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে শিক্ষক ফোরাম ও আন্দোলনরত শিক্ষকদের বিনাশর্তে আন্দোলন প্রত্যাহারের নির্দেশনা দিয়েছেন আচার্য।
রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা উপাচার্য, আন্দোলনরত শিক্ষক ফোরাম এবং শিক্ষক সমিতিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানায়।
দাবির মুখে অধ্যাপক আনোয়ার জাকসু নির্বাচন এবং উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন দিয়ে চলে যাওয়ার অঙ্গীকার করলেও আন্দোলনকারীরা চাইছেন, তার অবিলম্বে পদত্যাগ।
ছাত্রলীগের একদল কর্মীর হাতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের নিহত হওয়ার পর গত বছর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শরিফ এনামুল কবির উপাচার্য পদ ছাড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয় সরকার।
পরে নির্বাচনের মাধ্যমে স্থায়ী হওয়া এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামে শিক্ষকরা।
শিক্ষক সমিতির আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়লে এই বছরের শুরুতে হাই কোর্ট এক আদেশে শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো বাধা সৃষ্টি না করার নির্দেশ দেয়।
এরপর কৌশল বদলে শিক্ষক ফোরাম নামে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষকরা। ওই আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগ নেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষকরা আন্দোলন স্থগিত করলেও আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ তুলে পুনরায় আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষকরা।
0 comments:
Post a Comment